অর্থনীতিব্যবসা-বাণিজ্য

পাহাড়ে চাষবাদ শিখতে বিদেশ ভ্রমণ, খরচ হবে ৬০ লাখ টাকা!

এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য অন্য অঞ্চল থেকে আলাদা। পাহাড়ি মাটিতে কাদামাটির পরিমাণ কম হওয়াতে পানি ধারণক্ষমতাও অনেক কম। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির সময় ব্যাপক মাত্রায় ভূমিক্ষয় ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। যে কারণে কমে যায় মৃত্তিকার জৈব পদার্থ ও পুষ্টি উপাদান। আর বেড়ে যায় পাহাড়ের ঢালুর মাত্রা। অর্থাৎ, সামান্য ঢালু পাহাড় মাঝারি ঢালু পাহাড়ে, মাঝারি ঢালু পাহাড় অধিক ঢালু পাহাড়ে পরিণত হয়। তাই গবেষণার মাধ্যমে পাহাড়ি মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা প্রয়োজন বলে মনে করে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। তবে এই পাহাড়ি এলাকা চাষের উপযোগী করা এবং আধুনিক মৃত্তিকা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা শিখতে আবদার করা হয়েছে ৬০ লাখ টাকার বৈদেশিক প্রশিক্ষণের।

জানা যায় ‘পাহাড়ি এলাকায় টেকসই মৃত্তিকা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং মৃত্তিকা গুণাগুণের ভিত্তিতে শস্য উপযোগিতা নিরূপণ’ প্রকল্পের আওতায় করা হয়েছে এমন প্রস্তাব।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রকল্পটি জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে। কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রকল্পের যাচাই কমিটির সভা হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ে। এই সভাতেই প্রকল্পের বৈদেশিক প্রশিক্ষণসহ নানা খাতের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রকল্পের আওতায় একটি জিপ গাড়ি কেনা বাবদ চাওয়া হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। অথচ পরিপত্র অনুযায়ী পরিচালকের (গ্রেড-৪ এর কর্মকর্তা) জন্য সর্বোচ্চ ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গাড়ি কেনার বিধান রয়েছে।

এরপর মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট জানায়, পরিকল্পনা কমিশন যেভাবে বলবে সেভাবে প্রকল্পের ডিডিপি পুনর্গঠন করা হবে।

এইসব অদ্ভুত আবদার প্রসঙ্গে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. কামারুজ্জামান বলেন, প্রকল্পের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে। পরিকল্পনা কমিশন কারেকশন দিয়েছে, সেগুলো কারেকশন করবো। প্রকল্পের অনেক ব্যয় যাচাই-বাছাই করা হবে।

আরও পড়ুন: তিতাস গ্যাসের ঘুষ বাণিজ্যে গ্রাহকরা অসহায়!

পাহাড়ি চাষ শিখতে ৬০ লাখ টাকা ব্যয় প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, এখন ডলারের সংকট। তাই এ খাত নাও থাকতে পারে। কারেকশন হবে।

পাশাপাশি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে জিপ কেনা প্রসঙ্গে মো. কামারুজ্জামান জানান, নিয়ম অনুযায়ী এটা হওয়ার সুযোগ নেই। এই ব্যয় কমানো হবে। ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকার জিপ কেনা হবে। প্রকল্পের পেপার খসড়া আকারে আছে এখনো, চূড়ান্ত হয়নি।

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন জানায়, ওই প্রকল্পে মুদ্রণ ও প্রকাশনা এবং প্রচার ও বিজ্ঞাপনের বিস্তারিত বাজেট বিভাজনে বছরভিত্তিক ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইটেমভিত্তিক বিস্তারিত ব্যয় বিভাজন দেখাতে হবে।

এছাড়াও শস্য উপযোগিতা নিরূপণ সংক্রান্ত জরিপ কার্যক্রমের আওতায় মানচিত্র ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে লেখক, সহকারী ও সম্পাদকের সম্মানী, প্রধান কার্যালয়ে সম্পাদনার জন্য প্রতি উপজেলায় ৪০ হাজার টাকা করে সম্মানী ধার্য করা হয়েছে। ৫০টি উপজেলায় মোট ২০ লাখ টাকা চূড়ান্ত শস্য উপযোগিতা মানচিত্র ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু এ কার্যক্রমের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।

এই প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

 

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।